সাত খণ্ডে আত্মজীবনী লিখেছি। কিন্তু তারপরও গুগলে ইউটিউবে আমার সংক্ষিপ্ত জীবনী প্রচার করে অচেনা লোকেরা, যেসব ‘জীবনী’র সঙ্গে আমার জীবনের আদৌ কোনও সম্পর্ক নেই। অজ্ঞতা, অসত্য, অশিক্ষা, অপপ্রচার, অন্ধত্ব, অবিবেচনা, অমানবিকতাকে সম্বল করেই সেগুলো প্রচার করা হয়। আজ দেখলাম এক পাল লোক লিখেছে কেন আমি বাংলাদেশ ছেড়েছি।
আমার কিছুই না জেনে একেকজন বিজ্ঞের মতো বিশেষজ্ঞর মতো বিষোদ্গার করেছে। মাঝে মাঝে ভাবি পৃথিবীর কারও বিরুদ্ধে বোধহয় এত নানান কিসিমের লোক ঝাঁপিয়ে পড়ে না। ধর্ম নিয়ে কেন লিখেছি, ধার্মিকেরা বিরুদ্ধে। পুরুষতন্ত্র নিয়ে কেন লিখেছি, পুরুষতান্ত্রিকরা বিরুদ্ধে। সাহিত্যিককে নিয়ে কেন লিখেছি, সাহিত্যিকরা বিরুদ্ধে। ডানপন্থা নিয়ে কেন লিখেছি, ডানপন্থীরা বিরুদ্ধে। বামপন্থা নিয়ে কেন লিখেছি, বামপন্থীরা বিরুদ্ধে। সরকারকে নিয়ে কেন লিখেছি, সরকার বিরুদ্ধে।
ব্যক্তিগত ভাবে মানুষ আমি কী রকম? অতি সহজ অতি সরল অতি নিরীহ অতি বন্ধু বৎসল। পিঠে লোকে ছুরি বসাচ্ছে তো বসাচ্ছেই, যারা ছুরি বসায়, আবার তারা চোট পেলে তাদের জন্যই আহা আহা করে ছুটে যাই। নিজের আদর্শ আর সততাকে সমুন্নত রাখতে নিজের সমূহ ক্ষতি করতে দ্বিধা করি না। আমার এই চরিত্র সম্পর্কে কোথাও কাউকে কিন্তু এক বর্ণ কিছু উচ্চারণ করতে দেখি না।
দুর্ভাগা আমি নাকি দুর্ভাগা তারা, যারা আমাকে জানলো না? মাঝে মাঝে মনে হয় দুর্ভাগা আমিই। মানুষ হিসেবে এত সৎ, এত নিষ্ঠা, এত উদার, এত ত্যাগী, আমি না হলেও হয়তো পারতাম। যাদের চারদিকে সুখ্যাতি, তাদের হিসেবী জীবন দেখলে চমকে উঠি। হিসেবটা আবার আমার একেবারেই অভ্যেসে নেই।